মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর : আপাতত হাজতবাসে পাঠানো হল গ্রাম কমিটির নামে ফতোয়া জারি করা কীর্তিমানেরা। মঙ্গলবার ধৃত ৫ জনকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ২ জনকে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকী ৩ জনকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে চাঁদার নামে আর্থিক জরিমানা আদায় এবং হিংসা বিদ্বেষ ছড়ানোর মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে। তবে এই মামলার মূল পান্ডা গ্রাম কমিটির সম্পাদক প্রণব দাস পলাতক বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গতঃ পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার লক্ষ্যা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের চকদ্বারিবেড়্যা গ্রামে দিন কয়েক আগে ১২ দফা ফতোয়া জারি করে জানানো হয়, গ্রামে কোনও মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান অর্থাৎ বিবাহ বা শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সহ যে কোনও অনুষ্ঠান করতে গেলে গ্রাম কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়াও আইনী বিষয়ে থানায় না গিয়ে গ্রাম কমিটির কাছে তা জানাতে হবে। আর গ্রাম কমিটির নির্দেশ অমান্য করলে মোটা টাকা আর্থিক জরিমানা করা হবে। এই সংক্রান্ত লিফলেট বাড়ি বাড়ি বিলি করার পাশাপাশি গোটা এলাকার রাস্তাঘাটে সেঁটে দেওয়া হয়।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন তুঘলকি নিদান নিয়ে গ্রামের অন্দরেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। রবিবার রাতে এই নিয়ে গ্রাম্য বৈঠকে গোটা ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েন এলাকাবাসীরা। তবে সোমবার এই সংক্রান্ত খবর ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সোমবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি গ্রাম কমিটির কীর্তিমানদের মহিষাদল থানায় তলব করা হয়। সেখানেই হাজির হন গ্রাম কমিটির সভাপতি শঙ্কর ঘোড়ই, সঞ্জয় সাহু সহ ৫ জন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর সকলকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। শঙ্কর ঘোড়ই ও সঞ্জয় সাহুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় শাসক দলের নাম জড়ানোয় মঙ্গলবার চকদ্বারিবেড়্যা গ্রামে যান মহিষাদলের বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী। গ্রামবাসীদের তিনি আশ্বস্ত করে জানান, এমন খাপ পঞ্চায়েতকে তৃণমূল কখনও সমর্থন করে না। ইতিমধ্যে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলার তদন্ত শুরু করেছে। আইনের চোখে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে সাজা ভোগ করতে হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
মোবাইলে নিউজ আপডেটপেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিন, ক্লিক করুন Whatsapp