পূর্বমেদিনীপুর.ইন : যুগটা আধুনিক। হাতে হাতে মোবাইল, বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ, বাড়ি বাড়ি সরবরাহ হচ্ছে জল, ঝাঁ চকচকে রাস্তাঘাট। এসবই অলীক কল্পনা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী ব্লকের ভাদুতলা এলাকার পিরচক গ্রামের গোপাল, রুমী, লোধাদের পরিবারে।
যেখানে আজও পৌঁছায়নি বিদ্যুতের আলো। নেই রাস্তাঘাট, পানীয় জলের আধুনিক ব্যবস্থা। শুধু এখানেই নয়, গোটা জেলা জুড়েই লোধা সম্প্রদায়ের মানুষরা এভাবেই বঞ্চনার শিকার বলে অভিযোগ উঠেছে। তাহলে এত যে ঢাক ঢোল পিটিয়ে লোধাদের জন্য উন্নয়নের জিগির। সবটাই ফিকে হয়ে যায় এই এলাকায় গেলেই।
পিরচক গ্রামের এই এলাকাতে সব মিলিয়ে বাস করেন ৯টি লোধা পরিবার। যার সদস্যসংখ্যা প্রায় ৪৫ জন। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিশু। এমনই উপেক্ষিত লোধা সম্প্রদায়ের মানুষদের অধিকারের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই চালাচ্ছেন সমাজসেবী তথা কবি মৃণাল কোটাল।
পিসি চুনি কোটাল জীবনভর লোধা সম্প্রদায়ের জন্য লড়েছেন। সেই পথেই ভাইপো মৃণাল। আগের বাম এখনের তৃণমূল কিংবা কেন্দ্রে থাকা বিজেপি কাউকেই ছেড়ে কথা বলেন না তিনি। লোধাদের একটু উন্নয়নে তাঁর যে অক্লান্ত নির্ভিক পরিশ্রম তা এক কথায় স্বীকার করে মেদিনীপুর থেকে ঝাড়গ্রাম এলাকার সমস্ত লোধা সম্প্রদায়ের মানুষ।
খবরটা আগেই ছিল সকালে নিজে গিয়েই চাক্ষুষ করলেন পিরচক গ্রামের হতদরিদ্র লোধা পরিবারের দুর্দশার চিত্রটি। রাস্তায় মোরাম নেই, পায়ে চলে চলে তৈরি হয়েছে রেখা। ভাঙা নলকূপ আর শুকনো এক খান কুঁয়ো দুয়ে মিলে জোগায় তৃষ্ণার জল।
সকাল হলেই বড়রা বেরিয়ে পড়ে জঙ্গলে কাঠ পাতা কুড়োতে। বিকেলে তা বাজারে বিক্রি করে চাল ডাল কিনে বাড়ি ফিরে দুমুঠো রেঁধে শিশুদের মুখে জুটে একমুঠো অন্ন।
নেই বিদ্যুৎ, সুর্য ডোবার সাথে সাথেই অন্ধকার নেমে আসে লোধাদের ছোটো ছোটো মাটির বাড়িগুলিতেও! মড়ার ওপর খাড়ার ঘায়ের মত গত কয়েকদিন ধরে কয়েকটি হাতির দল এসে পৌঁছে আশে পাশের গ্রামে। এই বুঝি হাতির দল হানা দিল তাদের গ্রামে, এই সংশয়ে কয়েক রাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি এলাকার বাসিন্দারা।
মৃণালবাবু জানিয়েছেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আমি সকালে ওখান থেকে ফিরেই বিষয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকস্তরে জানিয়েছি। এখন দেখার প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয়।
জেলা খবরের আপডেট পেতে এইখানে ক্লিক করুন – Whatsapp