পূর্বমেদিনীপুর.ইন : দূরের স্কুল ছেড়ে বাড়ির আরও কাছে চলে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ঘটনা জানতে পেরেই উদ্বেল হয়ে উঠলেন গ্রামবাসীরা। সোমবার তারা রীতিমতো হাতে পোষ্টার নিয়ে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন।
প্রধান শিক্ষক অনেক করে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, তাঁর একাধিক অসুবিধের কোথা। কিন্তু নাছোড় গ্রামবাসীদের অনুনয় বিনয়ে অবশেষে সুর নরম হল প্রধান শিক্ষকের। তিনি আশ্বাস দিয়ে জানান, এই স্কুল ছেড়ে তিনি আর যাবেন না। তারপরেই উঠল অবস্থান।
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের উত্তর আমতলিয়ার গীতা রানী হাইস্কুলে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবপম পড়িয়ারিকে স্কুলে আটকে রাখার জন্যই গ্রামবাসীদের অভিনব প্রতিবাদ।
দেবপমবাবু জানান, কাঁথি থেকে প্রায় ৩০ কিমি রাস্তা পাড়ি দিয়ে তিনি এই স্কুলে যান। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা। তাঁর নিজের শরীরও ভালো যাচ্ছে না। তাই ১১ বছর আগে যোগ দেওয়া স্কুল ছেড়ে তিনি বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
কিন্তু গ্রামবাসীরা যে এভাবে তাঁকে স্কুলে রাখতে চান তা তিনি ভাবতেও পারেননি। গ্রামবাসীদের ভালোবাসা তিনি উপেক্ষা করতে পারলেন না। তাই তিনি নিজের সমস্যার কথা ভুলে গিয়ে এই স্কুলেই থাকছেন বলে জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে উত্তর আমতলিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্যা ফাঙ্গুনী জানা বলেন, এই স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষককে কিছুতে যেতে দেবো না। ওনার মতো নিষ্ঠাবান শিক্ষক হয়তো আর পাওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, উনি আসার পর স্কুলের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে পড়াশুনার অনেক উন্নতি হয়েছে।
স্কুলের প্রাপ্তন সম্পাদক জয়কৃষ্ণ মান্না বলেন, প্রধান শিক্ষকের অবদান এলাকাবাসী হিসেবে কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারি না। পিছিয়ে পড়া গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের ভালো ফলাফলের জন্য প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। তিনি স্কুল ছেড়ে চলে গেলে আবার গ্রাম অন্ধকারে ডুবে যাবে বলেই দাবী তাঁর।


