পূর্বমেদিনীপুর.ইন : শুক্রবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানা এলাকায় এক মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃত ছাত্রের নাম অর্ক গিরি (১৭)। ছেলেটি তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করত।
সূত্রের খবর্, চন্ডীপুরের বাসিন্দা পেশায় হাতুড়ে চিকিৎসক অশোক গিরির একমাত্র ছেলে অর্ক। ছেলেটি বরাবরই পড়াশোনায় খুব ভালো হওয়ায় তাঁকে তমলুকের হ্যামিল্টনে ভর্তি করেন তিনি।
আর তার পড়াশোনার সুবিধের জন্য তমলুকের পদুমবসানে একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। যেখানে অর্ককে সঙ্গে নিয়ে থাকে তার মা ও ৮ বছরের বোন। এই পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক ছিল।
শুক্রবার সকালে স্বামীর কাজে হাত লাগাতে অর্ক’র মা চন্ডীপুরে চলে যান। অর্ক নিজেই মা’কে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসে। এরপর বোনকে টিউশান পড়তে দিয়ে আসে সে। বেশ কয়েক ঘন্টা বাদে বোনটি বাড়ি ফিরে দেখে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।
তখন বন্ধ ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে ভেতরে তাকাতেই মেয়েটির চক্ষু চড়কগাছ। ঘরের মধ্যে তখন ঝুলছে দাদা’র দেহ। খবর পেয়ে সবাই তড়িঘড়ি এসে দরজার লক ভেঙে ভেতরে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ছেলেটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তবে কি কারণে ছেলেটি এমন সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে পরিবার। যদিও ছেলেটির মা জানিয়েছিলেন, আগের দিন মোবাইল দেখা নিয়ে ছেলেকে বকেছিলেন তিনি। তাহলে সেই অভিমানেই কি চলে গেল অর্ক, এই প্রশ্নই কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁর মা’কে।
অন্যদিকে এদিন বেলা ১০টা নাগাদ তমলুকের চনসরপুর হাইস্কুলের গেটের বাইরে একটি মোটর ভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্র। মৃত ছাত্রের নাম সন্দীপ মাইতি (১১)। তাঁর বাড়ি তমলুকের আনন্দপুরে।
ছেলেটি চনসরপুর হাইস্কুলেরই ছাত্র। স্থানীয়রা জানিয়েছে, এদিন স্কুল শুরু হওয়ার মুখে ছেলেটি স্কুল গেট থেকে বাইরে বের হতেই একটি মোটর ভ্যান প্রচন্ড গতিতে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। ধাক্কা খেয়ে ছেলেটি কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে।
এই সময় স্থানীয়রা মোটর ভ্যানটিকে তাড়া করলে সেটি পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আবারো শিশুটিকে ধাক্কা দেয়। এরপরেই উত্তেজিত জনতা ছুটে এসে রাস্তা অবরোধ করে দেয়। সেই সঙ্গে আহত ছেলেটিকে উদ্ধার করে তমলুক হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানেই কিছু সময় চিকিৎসার পর ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে।