দেবু সিং, পূর্বমেদিনীপুর.ইন : মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল এক মাসের শিশু। শনিবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় নিখোঁজ শিশুর পরিবার।
তাদের অভিযোগ, মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল থেকে ওই শিশুকে চুরি করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলে মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিখোঁজ ওই শিশু পরিবার । গোটা ঘটনার জানার পরই বিক্ষোভ সামলাতে ওই এলাকায় পৌঁছাই ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়া থানার জগবন্ধুটোলা গ্রামের বাসিন্দা গৃহবধূ সাঞ্জু মন্ডল (২২)। ২৭ ডিসেম্বর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর গুরুতর জখম হন ওই গৃহবধূ। ওইদিন রাতেই সাঞ্জুদেবীকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই গৃহবধূর এক এক মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তাই জখম ওই গৃহবধূর সঙ্গে পুত্র সন্তানটি ছিল।
মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে শনিবার দুপুরে ওই গৃহবধূ তার সন্তানকে বেডে রেখেই শৌচাগারে যায় । এরপর ফিরে এসে দেখে তার পুত্র সন্তান নেই। এই নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই গৃহবধূর পরিবারের লোকেরা মেডিকেল কলেজ ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
গৃহবধূর স্বামী রতন মণ্ডল, পেশায় লরি চালক । তার অভিযোগ, ২৭ ডিসেম্বর আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী সামান্য জখম হয়েছিলেন। এরপরই এক মাসের ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে বলেই পুত্র সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী বার্ন ইউনিটে চিকিৎসারত অবস্থায় ছিলেন। এদিন দুপুরে স্ত্রী শৌচাগারে যায় । তারপরে এসে দেখে বেড়ে ছেলে নেই। মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিট থেকে ছেলেকে চুরি করা হয়েছে বলেই আমাদের অভিযোগ। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
ওই গৃহবধূর মা পুতুল মন্ডলের অভিযোগ, আগুনে জখম হওয়ার পর দু’দিন ধরে মেয়ে সাঞ্জু মন্ডলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা চলছিল। একমাসের নাতিকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্যই সঙ্গে রেখেছিলেন মেয়ে। কিন্তু শনিবার অদ্ভুতভাবে বেড থেকে আমার নাতিকে চুরি হয়ে যায়। মেডিকেল কলেজের একাংশ এই ঘটনার পিছনে জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন পুতুলদেবী। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে
মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ প্রতীপ কুন্ডু জানিয়েছেন, চিকিৎসারত অবস্থায় কিভাবে ওই মহিলা তার সন্তানকে সঙ্গে রাখলেন সেটা জানা ছিল না। তবে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। এই ঘটনাটি নিয়ে মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
ইংরেজবাজার থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুন্ডু জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
জেলা খবরের আপডেট পেতে এইখানে ক্লিক করুন – Whatsapp