পূর্ব মেদিনীপুর.ইন : একসময় প্রায়ই জালে ধরা পড়ত বড় বড় চিতল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দেশীয় মাছের মতো চিতলও প্রায় হারিয়ে গিয়েছে গ্রাম গঞ্জের পুকুর থেকে। এই হারিয়ে যেতে বসা মাছটিকেই এবার পুকুরে কার্পজাতীয় রুই, কাতলা, মৃগেল মাছের সঙ্গে চাষ করছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার বামুনচক গ্রামের তরুন মৎস্যচাষী শুভ্রজ্যোতি সাহু।
হলদিয়া ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারন আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানান, আধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বনে চিতল চাষ করে সফলতা এসেছে। তাছাড়া উচ্চ শিক্ষিত শুভ্রজ্যোতি মাছ চাষে পেয়েছে কর্মসংস্থানের নতুন দিশাও যা আশে পাশের অনেক বেকার যুবকদের উৎসাহিত করবে।
শুভ্রজ্যোতি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে বাবার হাত ধরে বামুনচক গ্রামে গড়ে তোলেন ফিশারী ফার্ম। বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পর মাছ চাষই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। শুরুতে অল্প জায়গায় মৎস্য খামার গড়ে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন তিনি। এতে সফল হলে বাড়তে থাকে মাছ চাষের পরিধি।
চিতল ছাড়াও গুলসা টেংরা, পাবদা প্রভৃতি হারিয়ে যাওয়া মাছের সফল বানিজ্যিক চাষ করছেন শুভ্রজ্যোতি। হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তরের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে নিচ্ছেন মাছ চাষের বিভিন্ন প্রশিক্ষন।
শুভ্রজ্যোতি বলেন, দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলো ফিরিয়ে আনতে আমার যেমন আগ্রহ রয়েছে তেমনি হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তর থেকে দারুন উৎসাহীত করেছেন। ব্যাংক লোন ও সরকারী সহায়তাও পেয়েছি। তিনি বলেন, শুরুতে ৫০০ গ্রাম ওজনের কার্পজাতীয় মাছ পুকুরে ছাড়া হয়। পরে চিতলের পোনা ছাড়ি। একই সঙ্গে মা তেলাপিয়াও ছাড়া হয়।
এতে মা তেলাপিয়া যে বাচ্ছা দেয়, তা চিতলের খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়। বর্তমানে আমার পুকুরে একেকটি চিতল প্রায় আড়াই কেজি ওজনের হয়ে গেছে। বাজারে প্রতি কেজি চিতল বিক্রি হচ্ছে পাঁচশো টাকা।
হলদিয়ার মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ গোকুল মাজি বলেন, এই অতিমারির সময়েও আমাদের ব্লক মৎস্য আধিকারিক সুমন বাবু ভার্চুয়াল মাছ চাষের প্রশিক্ষন দিচ্ছেন যাতে মাছ চাষের অগ্রগতি অব্যহত এবং মাছ চাষে হলদিয়া এলাকার বেশ কিছু মাছ চাষি আগ্রহী হয়ে উঠছে।
হলদিয়ার বিডিও সঞ্জয় দাস হারিয়ে যাওয়া চিতল মাছ সহ বিভিন্ন মাছ চাষে মাছ চাষিদের আগ্রহী করে তুলতে অভিনব ভার্চুয়াল মাছ চাষের প্রশিক্ষনে সমগ্র মাছ চাষিদের আহ্বান জানিয়েছেন।