মহিষাদল, পূর্ব মেদিনীপুর : খেটে খাওয়া মানুষের মূল্যবান কাজের সময় নষ্ট করে রেশন দোকানে লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর দিন এবার শেষ হতে চলেছে। সৌজন্যে “দুয়ারে রেশন” কর্মসূচী। বুধবার গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও সফল ভাবে শুরু হয়ে গেল রাজ্য সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মসূচী। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজী জানিয়েছেন, প্রথম দিনেই গোটা জেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবারে পরীক্ষামূলক ভাবে রেশন পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হল।
রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর জনমোহিনী কর্মসূচীর সূচনা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের সরকার। বিরোধী পক্ষ যতই কটাক্ষ করুক না কেন, দুয়ারে সরকার, স্বাস্থ্যসাধী, লক্ষ্মীরভান্ডার বাঁ দুয়ারে রেশন কর্মসূচীতে সাধারণ মানুষের যে উৎসাহ তা নজরকাড়া। একটানা ঝড়বৃষ্টির দাপট থাকলেও বুধবার সকালে পূর্ব ঘোষণা মতোই দুয়ারে রেশন কর্মসূচী শুরু হয়ে যায়।
জেলা শাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজী জানান, “আজ জেলা জুড়ে ২৩৪ জন ডিলার দিচ্ছেন পরীক্ষামূলক ভাবে নিজের এলাকার ৩০টি করে পরিবারের হাতে রেশন তুলে দিচ্ছেন। আগামী দিনে এই প্রকল্পে সমস্ত রেশন গ্রাহকদের নিয়ে আসা হবে” বলেও জানিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, “ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য ডিলার পিছু ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেবেন। যাতে করে ডিলারদের পরিকাঠামো উন্নত করা যায়। সেই সঙ্গে ডিলার কমিশনও ৭৫ পয়সা থেকে বেড়ে দেড় টাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
বুধবার দুয়ারে রেশন কর্মসূচীর সঙ্গী হয়ে মহিষাদলের কিসমৎ নাইকুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরবেড়িয়া গ্রামে হাজির হয় আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিনিধি। মহিষাদলের ব্লক আধিকারীক যোগেশ মন্ডল, নোডাল অফিয়ার বিশ্বনাথ মালাকার সহ খাদ্য দফতরের আধিকারীক ও ডিলার অ্যাসোসিয়েশানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেন। ব্লক আধিকারীক জানান, “আজ পরীক্ষামূলক ভাবে দুয়ারে রেশন কর্মসূচী শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের মূল্যবান কাজের সময় নষ্ট করে আর রেশন ধরতে যেতে হবে না”।
সরবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ প্রধানের বাড়িতেই প্রথম রেশন সামগ্রী তুলে দিয়েছেন ব্লক আধিকারীক। বিশ্বজিৎ জানান, “আমি পেশায় রাজমিস্ত্রী। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেছি। কিন্তু প্রতিবার রেশন ধরতে গেলে সময় পৌঁছান যেত না। এর জন্য রেশন দোকান থেকে খালি হাতে ফিরে আসতে হত। দুয়ারে রেশন কর্মসূচী আমার কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এই প্রকল্প চলতে থাকলে আমার মতো বহু মানুষ উপকৃত হবেন” বলে মন্তব্য করেন তিনি।