মেদিনীপুর : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসাতে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরে।
এনিয়ে বুধবার জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বা ডিআইকে ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান ১১ মুসলিম সমাজের সদস্যরা। তাঁকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে ভুয়ো নিয়োগ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসতে বাধ্য হয় কোতোয়ালি থানার পুলিস। এদিন জেলাশাসকের কাছে প্রায় ১৪০ জনের সই সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র জমা দেয় ১১ গ্রাম মুসলিম সমাজ সেবা কমিটি।
তাঁদের অভিযোগ, মেদিনীপুর সদর ব্লকের চুয়াডাঙা জুনিয়ার হাই মাদ্রাসাকে ২০০৯ সালে (সাময়িক) অনুমোদন দেয় মাদ্রাসা বোর্ড। অথচ ওই এলাকায় কোনওদিন মাদ্রাসাই ছিল না। এলাকাতে একটি মাত্র উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় সাড়ে য়েছে। যেখানে তিনহাজার। তাছাড়া এই মাদ্রাসার ব্যাপারে এলাকার মানুষকেও সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁদের।
এই পরিস্থিতিতে ওই মাদ্রাসায় ২০১৬ সালে ন’জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে নিয়োগ করা হয়। যদিও ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা৷ বকেয়া বেতনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সম্প্রতি শুনানিও রয়েছে সেই মামলার।
চুয়াডাঙা এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনওরকম স্কুল না থাকা সত্বেও কীভাবে শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হল? শিক্ষক নিয়োগপত্রে সই রয়েছে জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দারের। যদিও চাপেশ্বরবাবু বলেন, চুয়াডাঙা জুনিয়র হাই মাদ্রাসা রয়েছে মেদিনীপুর শহরের হোসনাবাদে। তবে কোনও বিল্ডিং নেই। টিনের চাল দেওয়া একটি কাঠামো রয়েছে। মুসলিম সমাজের মহম্মদ মুক্তার আলি খান বলেন, চুয়াডাঙা থেকে হোসনাবাদের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি।
চুয়াডাঙায় অনুমোদিত মাদ্রাসা হোসনাবাদে কীভাবে থাকতে পারে? অর্থাৎ খাতায় কলমে হোসনাবাদে স্কুল দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির তাল করেছিলেন ডিআই। আমরা ডিআইয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছি। পাশাপাশি চুয়াডাঙাতেই নতুন মাদ্রাসা তৈরিরও আবেদন জানাচ্ছি।