ঝাড়গ্রাম : কংসাবতী নদী পেরিয়ে বুধবার সকালে ৩৫টি হাতির দল প্রবেশ করল কলাইকুন্ডা রেঞ্জের জটিয়ার জঙ্গলে। জঙ্গল লাগোয়া ঝাড়গ্রামে সাঁকরাইল ব্লকের বাঘমারি, প্রতাপপুর, ইটামাড়ো, কাটনিমাড়ো, বাঁশপতরি, খুদমোরই আটাডিহা সহ দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের হাতির আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে।
কেন না কয়েকদিন আগেই সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে হাঁড়িভাঙা- চুনপাড়া গ্রাম দিয়ে ৩০টি হাতির একটি দল এই জঙ্গলে ঢুকে ডেরা বেঁধেছে। গত মঙ্গলবার এই দলটি সাঁকরাইলের বাকড়া বিটের কাটনিমাড়ো ও ইটামাড়ো গ্রামের ধানজমিতে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে। দলটি জঁটিয়ার জঙ্গলে ফিরে না গিয়ে কাটনিমাড়ো গ্রামের ইউক্যালিপটাস বাগানে থেকে যায়।
পরে হুলা পার্টির লোকজন এসে দলটিকে জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা করলে দলটি ইন্দখাড়া, বারডাঙা গ্রামের দিকে চলে যায়। অন্যদিকে মেদিনীপুর ডিভিশনের চাঁদড়া রেঞ্জের গুড়গুড়িপাল বিট এলাকা থেকে ৩৫টি হাতির এই বড় দলটি ভ্রমরমারা, মনিদহ গ্রাম দিয়ে কংসাবতী নদী পেরিয়ে খেমাশুলি ও গুপ্তমনি গ্রামের মাঝে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরিয়ে এদিন সকালে জটিয়ার জঙ্গলে প্রবেশ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাটনিমাড়ো গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, আগে থেকেই হাতির একটি বড় দল তাণ্ডব চালিয়ে ধানচাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। জঁটিয়ার জঙ্গলে নতুন করে এসেছে ৩৫টি হাতির একটি দল। এবার দু’টি দল মিলিত হয়ে তাণ্ডব চালালে জমির ধানের আর কিছুই থাকবে না। তিনি জানান, এক জমির ‘থোড়’ ধান খেতে পাচ্ছে, তাই ঘর বাড়ি ভাঙচুর করছে না।
জঙ্গলের প্রান্তে রয়েছে বাঁশপতরি, খুদমোরই, আটাডিহা এই সমস্ত গ্রামগুলি৷ অন্যদিকে রয়েছে আরও পাঁচ-সাতটি গ্রাম। এই গ্রামগুলির ধান চাষের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দু’টি দল মিলে তাণ্ডব চালালে চাষিরা সর্বস্বান্ত হবে। জঙ্গলের পার্শ্ববর্তী আমাদের সাঁকরাইলের এরকম দশটি গ্রামের বাসিন্দারা আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি।
খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, বুধবার সকালে বড় একটি হাতির দল আমাদের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের জঁটিয়ার জঙ্গলে ঢুকেছে। সব মিলিয়ে এই জঙ্গলে এখন ৭০টি হাতি রয়েছে। এই হাতির দলকে কীভাবে অন্যত্র সরানো যায় সেই নিয়ে বুধবার আমাদের জরুরি বৈঠক হয়েছে। এত বড় দলকে এক জায়গায় দীর্ঘদিন রাখা সম্ভব নয়৷ দলটিকে নজরে রাখা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।
তাঁর আরও সংযোজন, এই দুইএকদিনের মধ্যেই দলটিকে অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হবে। ধানচাষের যে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। দু’টি দল দু’ দিক দিয়ে ঢুকেছে। ফলে তাদের অভিমুখ বোঝা যাচ্ছে না। চাষের জমি ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।