ময়না : স্বামী-সন্তানের সংসার ফেলে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছাড়ার একাধিক ঘটনায় খবরের শিরোনামে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানা এলাকা। এবার স্বামী সন্তান থাকার পরেও সামাজিক মাধ্যমে প্রেমে পড়ে প্রেমিকের বাড়ির সামনেই ধর্নায় বসল এক গৃহবধূ। শুক্রবার ময়না থানার রায়চক গ্রামে ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
স্বামী,সন্তান থাকার পরও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া ওই যুবককে বিয়ের দাবিতে ধর্না দিলেন গৃহবধূ। ঘটনা জানাজানি হতেই আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ময়না থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গৃহবধূ এবং তাঁর প্রেমিককে থানায় নিয়ে যায় পুলিস। দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে মিটমাট করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ময়না থানার পুলিস। ওসি গোপাল পাঠক বলেন, দু’পক্ষকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ময়না থানার পরমানন্দপুর গ্রামের ওই যুবতীর তিন বছর আগে পিংলা থানার নারাঙ্গাদিঘি গ্রামে বিয়ে হয়। স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ওই যুবতীর দু’বছরের একটি ছেলে আছে। মা ছ’য়েক আগে ওই যুবতীর সঙ্গে ময়না থানার রামচক গ্রামের এক যুবকের পরিচয় হয়। ওই যুবক অবিবাহিত৷ যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন যুবতী।
সম্প্রতি ওই যুবক গৃহবধূর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করতেই ফোনে হুমকি দিয়ে শুক্রবার সোজা তাঁর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেন বধূ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূ নিজেকে গর্ভবতী দাবি করে প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের জেরেই তিনি সন্তানসম্ভবাব্য বলে স্থানীয়দের জানান।
যুবতী অন্তঃসত্ত্বা কিনা তা যাচাই করতে ময়না থানার পুলিস গড়ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করলে ওই বধূ জানান, তিনি মিথ্যা দাবি করছেন। আপাতত ওই বধূ পরমানন্দপুর গ্রামে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন। প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক চোকানোর পরামর্শ দিয়েছে পুলিস। বাপের বাড়ির লোকজনকে এজন্য উদ্যোগী হতে হবে বলে পুলিস জানায়।
এদিন সকাল ১১টা নাগাদ রায়চক গ্রামে গৃহবধূ ধর্নায় বসার পর এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। স্থানীয়রা ওই এলাকার সিভিক ভলান্টিয়ারকে খবর দেন। এরপর থানায় খবর পৌঁছলে পুলিস রায়চক গ্রামে যায়। ওই যুগলকে থানায় আনা হয়। উর্দিধারীরা তাঁদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এ ধরনের সম্পর্ক থেকে যত দ্রুত বেরিয়ে আসা যায় ততই মঙ্গল বলে অভিমত দেন পুলিস আধিকারিকরা।
যুবতীর সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার জন্য যুবককেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ পর পুলিস যুবতীর পরিবার থেকে খোঁজখবর নেবে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দু’জনকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার ময়না থানার গোকুলনগর গ্রামের এক বধূ শাশুড়িকে বেঁধে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন। প্রেমিকের বাড়ি পিংলা থানা এলাকায়। স্থানীয়দের উদ্যোগে সেই বধূ বাড়ি ফিরে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। রামচক গ্রামের ঘটনায় পুলিস দু’জনকেই বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছে।