পূর্বমেদিনীপুর.ইন : পূর্ব বর্ধমানের ৯৯টি হিমঘরে এখনও প্রায় ৪০ শতাংশ আলু রয়ে গিয়েছে। চাহিদার তুলনায় তা অনেক বেশি। দু’মাসে এত পরিমাণ আলু খেয়ে শেষ করা সম্ভব নয়। এমনটাই বলছেন আধিকারিকরা। বিপুল পরিমাণ আলু মজুত থাকায় ছোট ব্যবসায়ী ও চাষিদের একাংশের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।
তাঁদের দাবি, এরাজ্যের আলু ঝাড়খণ্ড, বিহার ও অসমে যেত। কিন্তু এবছর ওই রাজ্যগুলির বাজার উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ীরা দখল করেছেন। দক্ষিণবঙ্গে এবার ফলন অনেকটাই কম হয়েছিল। দাম ভালো পাওয়ার আশায় অনেকেই হিমঘরে আলু মজুত রেখেছিলেন। কিন্তু এরাজ্যের হিমঘরগুলিতেও উত্তরপ্রদেশের আলু ঢুকতে থাকে। সেই কারণে এখন আলুর দাম নিম্নমুখী হয়ে গিয়েছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর জেলায় উৎপাদন কম হলেও বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ রয়েছে হিমঘরগুলিতে। এবার জেলার হিমঘরগুলিতে ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৭৪ হাজার ৯৬২ কুইন্টাল আলু মজুত করা হয়েছিল। ৬২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩৫০ কুইন্টাল আলু এখনও পর্যন্ত বেরিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, অন্যান্য বছর এই সময় অনেক বেশি আলু হিমঘর থেকে বেরিয়ে যেত।
পূর্ব বর্ধমানের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন অল্প পরিমাণ কিছু আলু ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। তবে তাতে খুব বেশি লাভবান হওয়া যাবে না। মেমারি-২ ব্লকের আলুচাষি সামাদ মোল্লা বলেন, বাছাই করা আলু ৯৫০ টাকা বস্তা বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে তা ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট সাইজের আলু ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগামী দিনে আর বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে চাষিরা দাম না পেলেও বাজারে আলুর দাম তেমন কমেনি। ফড়েরা এই পরিস্থিতিতেও ফায়দা তুলছে।
এক আলুচাষি বলেন, হিমঘরে বিভিন্ন সাইজের আলু রয়েছে। ভালো আলুর তবুও কিছুটা দাম পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ছোট সাইজের আলুর দাম নেই। এবছর চাষ করতে প্রায় দ্বিগুণ খরচ হয়েছিল। দাম ঊর্ধ্বমুখী না হলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। নিয়ম অনুযায়ী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত আলু বের করা সম্ভব হবে না। এবছর জেলায় উৎপাদন কম হলেও বিপুল পরিমাণ আলু থেকে গিয়েছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু নিয়ে আসায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।