কোলাঘাট : স্কুল শিক্ষকের নামে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির এক রহস্যজনক ম্যাসেজ ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। তারপরেই আচমকা মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল পেশায় শিক্ষক বাপ্পা বর্মণ। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার দেড়িয়াচক গ্রামে। মৃতের পরিবারের দাবী, গত কয়েকদিন ধরেই এলাকার একাধিক ফোনে বাপ্পার নামে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির একটি ম্যাসেজ ঘোরাফেরা করছিল। তার পরেই মঙ্গলবার সকালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখা যায় বাপ্পাকে। গোটা ঘটনায় রীতিমতো হতবাক গোটা পরিবার।
বাপ্পার স্ত্রী মৌসুমি জানান, “আমার স্বামীর নামে একটি ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত ম্যাসেজ ঘোরাফেরা করছিল বিভিন্ন ফোনে। একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে এই ম্যাসেজটি ছড়ানো হয়েছে। এই নিয়ে গতকাল বাড়িতে আলোচনাও হয়েছিল। সেখানে বাপ্পা এমন কোনও ব্যাঙ্ক ঋণের বিষয়ে জানে না বলেছিল। কিন্তু আজ সকালে বাড়ির বাইরে গিয়ে পাশের একটি ফাঁকা ঘরে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে গিয়েছে। কেন এমন হল তা বুঝতে পারছি না”।
বাপ্পা বর্তমানে কাঁথির ভবানীপুর অঘরচাঁদ হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সোমবার তিনি স্কুলেও গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে জানিয়েছিলেন বুধবার তিনি পুনরায় স্কুলে যাবেন। এলাকায় যথেষ্ট শান্তশিষ্ট হিসেবে পরিচিত বাপ্পার কারও সঙ্গে কোনও শত্রুতা ছিল কিনা তাও কেউ মনে করতে পারছেন না। বাপ্পা’র স্ত্রীর দাবী, “আমার স্বামীর ফোনটি দু’দিন ধরে অস্বাভাবিক ভাবে চলছে। এটা কেউ হ্যাক করে ফেলতেও পারে। কিন্তু তাঁর আত্মহত্যার পেছনে কি রহস্য তা আমাদের জানা নেই”।
মৃতের প্রতিবেশী অজয় বর্মণ জানান, “আমার ফোনে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে বাপ্পার নামে ম্যাসেজ আসে যেখানে তাঁকে চোর অপবাদ দেওয়া হয়েছে। সে নাকি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে প্রতারণা করেছে বলে ম্যাসেজে দাবী করা হয়েছে”। অজয় জানান, “এই ম্যাসেজ পাওয়ার পরেই আমি বাপ্পার বাড়িতে খবর পাঠাই। কিন্তু তারই মাঝে আচমকা বাপ্পার আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় আমরা বিস্মিত”।
ঘটনার খবর পেয়েই বাড়ি থেকে মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় কোলাঘাট থানার পুলিশ। দেহটিকে ময়না তদন্তের জন্য তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি কি কারনে এমন ঘটনা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে। কোলাঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ইমরান মোল্লা জানিয়েছেন, “মৃতের পরিবারের কাছ থেকে একটি আত্মঘাতী হওয়ার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করে কি কারণে মৃত্যু তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে”।