নন্দীগ্রাম : নন্দীগ্রামের শহীদ দিবস কার দখলে থাকবে তা নিয়েই টানাপোড়েন চলছে বহু বছর ধরে। কিন্তু দেখতে দেখতে ১৫টা বছর পেরিয়েও আজও জানা হল না হতভাগ্য ১২ জন নিখোঁজ জমি আন্দোলনকারী কোথায়? তাদের শেষ অবস্থা কি হয়েছিল তা আজও প্রকাশ্যে আসেনি। শুধু তাই নয়, যারা এই কান্ডের নেপথ্যে ছিল তাঁদেরও চিহ্নিত করা যায়নি আজও। এই হতাশা চেপে রাখতে পারছেন না শহীদ পরিবারগুলিও।
২০০৭ সাল জুড়ে নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলন রুখে দিয়েছিল এসইজেড গড়ার নামে কালা আইন প্রয়োগ করে একল্পপ্তে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার একর জমি কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা। পরবর্তীকালে এই জমি আন্দোলনের রাশ তৃণমূলের হাতে চলে যায়। রাজ্যে পালাবদলও ঘটে এই নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে হাতিয়ার করে। কিন্তু ২০০৭ সাল জুড়ে যারা নারকীয় তান্ডব চালিয়েছিল নন্দীগ্রামে সেই অপরাধীরা আজও অধরা। অন্তরালেই থেকে গিয়েছে বহু নিরীহ মানুষের আত্মাহুতির কাহিনী।
ইতিমধ্যে বেশিরভাগ নিখোঁজের পরিবারই মেনে নিয়েছেন, তাদের কাছের মানুষেরা আর বেঁচে নেই। অনেকে পারলৌকিক ক্রিয়াও সম্পন্ন করে ফেলেছেন। এই পরিস্থিতিতে নিখোঁজদের ডেথ সার্টিফিকেট পেতেই এবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের জামবাড়ির বাসিন্দা দূর্গাপদ মাইতির স্ত্রী অমিতা মাইতি। স্বামীর প্রসঙ্গ উঠলেই এখনও চোখ ছল ছল করে ওঠে তাঁর। এ বছরের গোড়ায় স্বামীর পারলৌকিক ক্রিয়া সেরেছেন। তিনি জানান, “ডেথ সার্টিফিকেট পাইনি। তাই বিধবাভাতার আবেদন করতে পরিনি।
একই চিত্র বাকী হতভাগ্য পরিবারগুলিরও। এই মুহূর্তে অন্তরালেই চলে গিয়েছেন শহীদ পরিবারগুলি। বছরভর শহীদ দিবস এলেই রাজনৈতিক কর্মকান্ড বেড়ে যায় নন্দীগ্রামে। আন্দোলনকে হাতিয়ার করে রাজনীতির ময়দান সরগরম হয়ে ওঠে। কিন্তু জমি আন্দোলনের নামে যে রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছিল তার দোষীদের আজও চিহ্নিত করা যায়নি। শুধু রয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দ্বৈরথ।
আরও পড়ুন : শহীদ দিবসের শোক-দুঃখের অনুভুতি গৌণ, আজ নন্দীগ্রামে শুভেন্দু কুনাল দ্বৈরথ !