নন্দীগ্রাম : আজ নন্দীগ্রামে দেখা যাবে ক্ষমতার আস্ফালনের লড়াই। যার তলায় চাপা পড়ে যাচ্ছে ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের মহেশপুর, গোকুলনগর থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ১২ জন জমি আন্দোলনকারীর করুন স্মৃতি। পরিবর্তে এই আন্দোলনেকে হাতিয়ার করে তৃণমূল বনাম শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথ বেশী করে প্রকট হয়ে উঠেছে।
সকালে নন্দীগ্রামে থাকছেন পূর্ব মেদিনীপুরে সংগঠনের বিশেষ দায়িত্ব প্রাপ্ত তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পরে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও জানাবেন শ্রদ্ধা। স্বাভাবিক ভাবেই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ওই কর্মসূচিকে ঘিরে টানটান উত্তেজনা দুই শিবিরে।
২০০৭ সালে আজকের দিনে ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রাম পুনরায় দখলের জন্য ঝাঁপিয়েছিল সিপিএম। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল “অপারেশান সূর্যোদয়”। সেদিন বেলার দিকে একই সঙ্গে তেখালি ব্রিজ হয়ে গোকুলনগর, মহেশপুর দখল করে সিপিএম বাহিনী। আর একটি দল সাতেঙ্গাবাড়ি, রানিচক হয়ে একের পর এক গ্রাম দখল করে।
সেদিনের অভিযানে মহেশপুরে ভূমি উচ্ছেূ প্রতিরোধ কমিটির একটি মিছিলে সিপিএম বাহিমী হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে খেজুটিতে তুলে নিয়ে যায়। সেদিন থেকেই আদিত্য বেরা সহ ১০ জন নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকেই এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা।
প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ হিসাবে পালন করে তৃণমূল। ওই সময় সংঘর্ষে গোকুলনগরে মৃতদের শ্রদ্ধা জানাতে কর পল্লিতেই মাত্র কয়েক ফুটের দুরত্বে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে মঞ্চ বেঁধেছে বিজেপি এবং তৃণমূল। নন্দীগ্রাম থানা সূত্রের খবর, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তৃণমূল সভা করবে। সেখানে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবেন কুণাল ঘোষ-সহ তৃণমূলের অন্য নেতৃত্ব।
ওই জায়গাতে দুপুর ২টো থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সভা করবে বিজেপি। তেখালি সেতু থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার পদযাত্রা ওখানে পৌঁছে শহিদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। স্বল্প সময়ের জন্য সভাও করবেন।
দু’দলই মঞ্চে শহিদ পরিবারের সদস্যদের আনতে মরিয়া। ২০২১ বিধানসভায় জয়ের শক্তি বিজেপি কতটা ধরে রাখতে পেরেছে বা পরাজয়ের ক্ষত তৃণমূল তার ভিত কতটা চাঙ্গা করতে পেরেছে— আজ, যেন তারই পরীক্ষা। তৃণমূলের দাবি, ২০২১ পরে নন্দীগ্রামে বিজেপিতে দ্রুত ভাঙন । স্থানীয়েরা আস্থা হারিয়েছেন।