তমলুক : পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রসাসনের তরফে আগেই দেওয়া হয়েছিল ডেটলাইন। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে রবিবার ২৬ নভেম্বর সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোট চলাচল বন্ধ করার কথা শোনা যাচ্ছিল। যাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। বিক্ষিপ্ত ভাবে জেলার বিভিন্ন (Purba Medinipur) প্রান্তে দেখা গিয়েছে প্রতিবাদ আন্দোলন। তারপরেও কি রবিবার থেকেই জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলি টোটো মুক্ত করতে উদ্যোগী হবে প্রশাসন? এই আলোচনাতেই আপাতত সরগরম গোটা জেলা।
প্রসঙ্গতঃ বাস মালিকদের সংগঠনের মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলিতে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করতে পরিবহন দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে দফতরের তরফে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গত ১৮ নভেম্বর পুলিশ সুপারের অফিসে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজিত হয়। জেলার সমস্ত টোটো ইউনিয়ান, বাস মালিক সংগঠন সহ পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারীকরা এই বৈঠকে হাজির ছিলেন।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট তিনটি জাতীয় সড়ক এবং দু’টি রাজ্য সড়ক রয়েছে। নন্দকুমার থেকে দীঘা পর্যন্ত ১১৬বি জাতীয় সড়ক রয়েছে। এছাড়া, কোলাঘাট থেকে হলদিয়া ৪১নম্বর জাতীয় সড়ক এবং কোলাঘাট, পাঁশকুড়া থানার উপর দিয়ে ৬নম্বর জাতীয় সড়ক চলে গিয়েছে। এছাড়াও পাঁশকুড়া-দুর্গাচক ৪নম্বর স্টেট হাইওয়ে(এসএইচ) এবং বেলদা-কাঁথি ৫নম্বর রাজ্য সড়ক রয়েছে। যেখানে টোটোর সংখ্যা অগুনতি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুরে দুর্ঘটনার হার বেশি। এই দুর্ঘটনা রোধে এবং সরকারি নির্দেশিকা কার্যকর করতে জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোটো চালানো বন্ধ করতে তৎপর হয়েছে পুলিশও। ২৫ নভেম্বর থেকে জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার কথা ছিল। ১৮ তারিখের বৈঠকে সেরকমই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। তবে তার আগে শুক্রবার টোটো পরিষেবা বন্ধ রেখে টোটো চালকরা এসডিও অফিসে গিয়ে ডেপুটেশন দেন। ফলে শনিবার টোটো চলাচল আর পাঁচটা দিনের মতো স্বাভাবিক ছিল। তবে রবিবার কি পরিস্থিতি হবে তা নিয়েই দোলাচলে রয়েছেন টোটো চালকরাও।
যদিও প্রশাসনের এই ততপরতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তমলুক শহর টোটো চালক ইউনিয়নের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া সংবাদ মাধ্যমে জানান, “প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ টোটোয় চড়ে হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ডাক্তারের চেম্বার এবং ল্যাবে যান। এছাড়া, অন্যান্য যাত্রী তো আছেই। টোটো চালকদের রোজগারের কথা ছেড়ে দিলাম। এই মানুষরা যে পরিষেবা পান, তার কী হবে? আমরা সরকারি নিয়ম এবং কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার কথা বলছি না। কিন্তু, সাধারণ মানুষের পরিষেবা বিঘ্নিত করে কিছু হতে পারে না”। তবে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে। তাই প্রশাসন ও পুলিস আগামী দিনে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলেই।